বাংলাদেশের সংগীত অঙ্গনের আলোচিত ও সমালোচিত নাম মইনুল আহসান নোবেল আবারও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। ওপার বাংলার জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো ‘সারেগামাপা’-তে অংশ নিয়ে রাতারাতি খ্যাতি অর্জন করা এই শিল্পী, সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যান কেলেঙ্কারি, মাদকাসক্তি এবং একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে। সর্বশেষ, এক তরুণীকে অপহরণ করে ধর্ষণের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এক সময় কণ্ঠের যাদুতে দুই বাংলায় ঝড় তোলা নোবেল ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন নানা বিতর্কে। রিহ্যাব থেকে বের হয়ে সংগীতে ফেরার চেষ্টা করলেও পুনরায় ফিরে যান পুরনো জীবনে। এবার অভিযোগ আরও গুরুতর। ঢাকার ডেমরা থানায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, নোবেল এক তরুণীকে অপহরণ করে দীর্ঘ সময় আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছেন।
ভুক্তভোগী তরুণী, যিনি রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী, জানান—২০১৮ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোবেলের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। দীর্ঘদিনের যোগাযোগের পর ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর নোবেলের সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। অভিযোগ অনুযায়ী, ‘স্টুডিও দেখানোর’ নাম করে ডেমরার একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে তাকে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়।
সেখানে তরুণীর মোবাইল কেড়ে নিয়ে, ধর্ষণের পর সেই দৃশ্য ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাকে দীর্ঘদিন ব্ল্যাকমেইল করা হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, এক পর্যায়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় চুলের মুঠি ধরে তরুণীকে সিঁড়ি দিয়ে টেনে নেওয়া হয়, যার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এই ভিডিও দেখে তার পরিবার জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে তাকে এবং গ্রেপ্তার করে নোবেলকে।
নোবেলকে গ্রেপ্তারের পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগী তরুণী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এই প্রথম নয়, নোবেলের বিরুদ্ধে এর আগেও নারী কেলেঙ্কারি ও মাদকের মামলায় গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে। একাধিক বিয়েও টেকেনি তার। এক সময় যিনি ছিলেন লাখো ভক্তের প্রিয়, আজ তিনি যেন এক করুণ আত্মবিধ্বংসী যাত্রার নাম। তার জীবন হয়ে উঠেছে এক উল্টোস্রোতের গল্প, যেখানে সাফল্যের আলো ম্লান হয়ে গেছে বিতর্কের অন্ধকারে।